Saturday, April 20, 2024

সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর

সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের আহ্বান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর
বাংলাদেশের সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা ও বিনিয়োগের জন্য জার্মান বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে জার্মানির হামবুর্গের অ্যাংলো-জার্মান ক্লাবে আয়োজিত ‘বাংলাদেশ : সাসটেইনেবলিটি অব সীফুড সাপ্লাই চেইন অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স’ শীর্ষক ব্যবসায়িক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে মন্ত্রী এ আহ্বান জানান। বাংলাদেশ দূতাবাস, জার্মানি, সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া, বাংলাদেশ এবং জার্মান-এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এ সেমিনারে আয়োজন করে।
জার্মানিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ দূতাবাস, জার্মানি-এর মিনিস্টার (কমার্শিয়াল) মো. সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে বাংলাদেশের মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক, হামবুর্গে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ওয়াল্টার স্কট, বাংলাদেশের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ব্লু ইকোনমি সেলের প্রধান (যুগ্মসচিব) ড. আবু নঈম মুহাম্মদ আবদুছ ছবুর, জার্মান ফিশ প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রির ফেডারেল অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. ম্যাথিয়াস কেলার, গ্লোবাল গ্যাপ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিশ্চিয়ান মোলার, জার্মান-এশিয়া প্যাসিফিক বিজনেস অ্যাসোসিয়েশনের কান্ট্রি কমিটির চেয়ারম্যান থমাস কনিং, জার্মান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি আব্বাস আলী চৌধুরী,সলিডারিডাড, বাংলাদেশ-এর স্ট্র্যাটেজিক এনগেজমেন্ট লিড মঈন উদ্দিন আহমেদসহ জার্মানির মৎস্য খাতের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সলিডারিডাড নেটওয়ার্ক এশিয়া, বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ম্যানেজার সেলিম রেজা হাসান।
সেমিনারে মন্ত্রী বলেন, জার্মানি অনেক প্রাচীন,উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ। এ দেশের প্রযুক্তি, নীতি, গবেষণা অনেক সমৃদ্ধ। মৎস্য খাতে জার্মানি ও বাংলাদেশ একসাথে কাজ করার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এ খাতে দুই দেশের বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়েরও সুযোগ রয়েছে।
মন্ত্রী আরো যোগ করেন, বাংলাদেশ প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ একটি দেশ। বিশেষ করে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ সমুদ্র সম্পদ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের মাধ্যমে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকায় আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এখন আমাদের গবেষণার ক্ষেত্র, সম্পদের ক্ষেত্র অনেক বিস্তৃত। সমুদ্র অঞ্চলে আমাদের খুব বেশি অভিজ্ঞতা নেই। এ জন্য আমরা সবসময় সমুদ্র সম্পদের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন উন্নত দেশকে সমুদ্র সম্পদ নিয়ে গবেষণা, বিনিয়োগ ও একসাথে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাই।
জার্মান বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে এ সময় মন্ত্রী বলেন, জার্মানি বাংলাদেশের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র। দুই দেশ মৎস্য খাতে একসাথে কাজ করতে পারে। মৎস্য খাতে জার্মান বিনিয়োগকারীদের গবেষণা, অভিজ্ঞতা, মৎস্য মাননিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন বাংলাদেশের কাজে লাগবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে এখন বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ ও সরকারের বিনিয়োগ উপযোগী নীতি রয়েছে । বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে শিল্প স্থাপন ও আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কর অব্যাহতি সুবিধাসহ সরকার সবধরণের সহযোগিতা প্রদান করবে।
মন্ত্রী আরো যোগ করেন, মৎস্য ও মৎস্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। রপ্তানির পূর্বে প্রতিটি মাছ এখন  ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। বাংলাদেশের মাছের মান নিয়ে এখন আর বিদেশিদের অভিযোগ নেই। কারণ‌ নিরাপদ মৎস্য ও মৎস্যপণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির ক্ষেত্রে এখন বাংলাদেশ কোন আপোষ করে না।  মাছের মান নিশ্চিত করতে আগে কোনো আইন ছিলনা, বর্তমান সরকার মৎস্য ও মৎস্যপণ্য পরিদর্শন‌ ও মান নিয়ন্ত্রণে আইন করেছে। আইন অমান্য করলে জরিমানা ও শাস্তির বিধান করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এমনকি মাছের খাদ্যোর ব্যাপারেও বর্তমান সরকার অনেক সচেতন। বাংলাদেশের মাছকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা সরকারের লক্ষ্য।
এ সময় মন্ত্রী আরো বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে অন্যান্য দেশের মতো উন্নত করা। তাঁর স্বপ্ন পূরণের আগেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তবে তাঁর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নপূরণে কাজ করছেন। তাঁর হাত ধরে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। শেখ হাসিনাকে বলা হয় উন্নয়নের ম্যাজিশিয়ান।
তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ এখন শুধু উন্নয়নের কথা ভাবছে না, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করছে। একসময় আমাদের লক্ষ্য ছিল উন্নয়ন। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের নীতি, শুধু উন্নয়ন নয় বরং উন্নয়ন অবশ্যই টেকসই হতে হবে।
বাংলাদেশে শিগগিরই আন্তর্জাতিক সীফুড মেলা আয়োজন করা হচ্ছে জানিয়ে এ খাত সংশ্লিষ্ট জার্মান গবেষক, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের সীফুড মেলায় অংশগ্রহণের বাংলাদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান মন্ত্রী।
- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর