Free Porn
xbporn

buy twitter followers
uk escorts escort
liverpool escort
buy instagram followers
Galabetslotsitesi
Galabetsondomain
vipparksitesigiris
vipparkcasinositesi
vipparkresmi
vipparkresmisite
vipparkgirhemen
Betjolly
Saturday, July 27, 2024

বলেছিলে তাই চিঠি লিখে যাই

 

নানান রকম চিঠি আসে নানান রকম খামে প্রাপক থাকে ডানখানে তার প্রেরক থাকে বামে।
মনের কথাগুলো কাগজের খাতায় লেখায় চিঠি। শব্দের সীমানায় হৃদয়ের ছবি আঁকাই চিঠি। কোনো কথা না বলে, অনেক কথা বলাই চিঠি। চিঠির মধ্য দিয়ে আমরা একে অন্যকে এতো আগলহীন, স্পষ্ট এবং কাছাকাছি করে পেতে পারি যে, তেমন করে মুখের কথাতে কখনোই পারি না। চিঠি লেখার সময় মনে হয় যতই দূরে থাক না কেন মনে হয় এইতো পাশে প্রিয়জন-তাই আমরা গান গাই-
বলেছিলে তাই চিঠি লিখে যাই,
কথা আর সুরে সুরে
মন বলে তুমি রয়েছ যে কাছে
আঁখি বলে কত দূরে’।
চিঠিটা তার পকেটে ছিল ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা। মা জানতে চেয়েছে খোকা কবে বাড়ি আসবে। খোকার জন্য উড়কি ধানের মুড়কি, এটা সেটা আরো কত কী ভেজে রেখেছে! মায়ের কাছে খোকার আর যাওয়া হয়নি। মায়ের ভাষার মর্যাদা রাখার অঙ্গীকার খোকাকে রাজপথে শাণিত প্রতিবাদের ঝাঁঝালো মিছিলে নামিয়েছিলো। খোকার রক্তে ভিজেছে চিঠির পাতা। এ পাতার প্রতিটি অক্ষর আজ আমাদের শপথের স্বাক্ষর।

মনের গহিনে গোপনে হাজারো কথা জমা হয়ে আছে; বন্ধুকে বলবে বলে। কিন্তু কোথায় বন্ধু? সে তো মাঠের পারের দূরের দেশে। ভরসা তাই চিঠি। মনের আনন্দে চিঠি লেখে আর গায়-
‘চিঠি লেইখাছিনু সে রাইতে লন্ঠন জ্বালাইয়া, কাল সকালের ডাকে চিঠি দিমুরে পাঠাইয়া, পরশু দিন বন্ধুর কাছে যাইবোরে পৌঁছাইয়া’।

সময়ের প্রয়োজনে, জীবনের আয়োজনে প্রিয়জনকে বিদেশে যেতে হয়। তাই ব্যাকুল হৃদয়ের জিজ্ঞাসা- আর কী দেখা হবে? ও আমায় মনে রাখবে তো? প্রেমিকার তীব্র, ব্যাকুল মনে উৎকণ্ঠার শেষ নেই। কী হবে এই প্রেমের পরিণাম। তাই প্রেমিকা মিনতি, ‘বিদেশ গিয়া বন্ধু আমায় ভুইলো না/চিঠি দিও, পত্র দিও, জানাইও ঠিকানা’।
পৃথিবীর ক্ষুদ্র চিঠিটি লিখেছেন ভিক্টর হুগো। ফরাসি বিপস্নবের পটভূমিতে তার লেখা উপন্যাস ‘লা মিজারেবল’ প্রকাশিত হবার পর লন্ডনের প্রকাশকের কাছে বইয়ের কাটতি জানতে চিঠি দিয়েছিলেন শুধু একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন দিয়ে। প্রকাশক একটি আশ্চর্যবোধক চিহ্ন দিয়ে চিঠির জবাব দিয়েছিলেন। জবাবটি ছিলো লেখকের জন্য আনন্দের।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চিঠিটি লিখেছিল নিউইয়র্কের একজন নারী তার প্রেমিককে। ১৯৫২ সালে কোরিয়াতে যুদ্ধ চলাকালে তার প্রেমিক মার্কিন সেনাবাহিনীর সৈনিক হিসেবে রণাঙ্গনে ছিলেন। সে সময় তিনি তিন হাজার ২০ ফুট লম্বা একটি চিঠি লিখে ফেলেন তাকে; যা লিখতে তার সময় লেগেছিলো একমাস।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর জীবনের বিপুল, বিরাট, বিচিত্র অভিজ্ঞতা ও পদ্মায় বোট ভাসিয়ে দেখা দুই পাড়ের আবহমান বাংলার চিরায়ত রূপ বর্ণনা করেছেন ভ্রাতুষ্পুত্রী ইন্দিরা দেবীর কাছে চিঠি দিয়ে। বাংলার নদী-নারী আর নিসর্গের নান্দনিক প্রচ্ছদে আঁকা সেই চিঠিগুলো ‘ছিন্নপত্র’ নামে বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হয়ে আছে।
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু তার কন্যা ইন্দিরা গান্ধীকে মানুষের জীবনবোধ, প্রেম-প্রকৃতি, মূল্যবোধ, ভারতের স্বাধীনতা প্রভৃতি বিষয় জানাতে যে সব চিঠি লিখেছেন, তার মাঝে ৩০টি চিঠি নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৯২৯ সালে ‘Letters from a father to his daughter’ শিরোনামে। এলাহাবাদ থেকে প্রকাশিত গ্রন্থের মুখবন্ধে নেহেরম্ন বলেন, ‘চিঠিগুলো লিখেছিলাম আমার মেয়ে ইন্দিরাকে, ১৯২৮ সালের গ্রীস্মকালে। ইন্দিরা তখন হিমালয়ের কোলে মুসৌর শহরে, আর আমি রয়েছি সমতলভূমিতে। একটি দশ বছরের ছোট্ট মেয়েকে লেখা নিছক ব্যক্তিগত চিঠি এগুলো। কিন্তু আমার বন্ধুবান্ধব চিঠিগুলো পড়ে, তার মধ্যে কিছু উৎকর্ষতার পরিচয় পেয়েছে। ওরা আমাকে এগুলো বই আকারে প্রকাশের কথা বললো, যাতে এর পাঠকবর্গের সংখ্যা বিস্তৃতি লাভ করে। ওদের পরামর্শের আমি যথেষ্ট মূল্য দিই কিন্তু জানি না, অন্যান্য ছেলেমেয়েদের এগুলো কেমন লাগবে। তবু আমি মনে করি, তারা যখন চিঠিগুলো পড়বে তখন হয়তো এ পৃথিবীকে তাদের মনে হবে’।

বাংলা সাহিত্যের প্রথম চিঠি কাব্য মাইকেল মধুসূদন দত্তের ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’। আবার দেখি নিমাই ভট্টাচার্যের ‘মেম সাহেব’ উপন্যাস শুরু থেকে শেষপর্যন্ত একটা চিঠি।
১৯৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় একজন মুক্তিযোদ্ধার একটি অংশ ছিল এমনই হৃদয়গ্রাহী- ‘মা মুক্তিসেনার ক্যাম্প থেকে তোমাকে লিখছি। এখন বাইরে ভীষণ বৃষ্টি। তাঁবুর ফাঁক দিয়ে দেখতে পাচ্ছি সমস্ত দিগন্ত জুড়ে মেঘ। মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। তাঁবুর কাছে একটি ছোট্ট ডোবা পানিতে টইটুম্বুর। আজ সারাদিন বৃষ্টি হচ্ছে কিনা, তাই সন্ধ্যার ঠিক পর পরই তোমাকে চিঠি লিখতে বসেছি। বাইরে মেঘ, বৃষ্টির শব্দ, বিদ্যুতের চমক, থেকে থেকে মেঘের ডাক- সব মিলিয়ে মন্দ লাগছে না। আচ্ছা মা, সারা রাত এমনি চলার পর সকালে ঝকঝকে আকাশে যে সূর্য ওঠে তার আলো খুব উজ্জ্বল হয়, তাই না?

জেলখানার চিঠিতে তুরস্কের কবি নাজিম হিকমত বলেন-
প্রিয়তমা আমার, তোমার শেষ চিঠিতে তুমি লিখেছো:
‘মাথা আমার ব্যথায় টনটন করছে, দিশেহারা আমার হৃদয়’।
তুমি লিখেছো: ‘যদি ওরা তোমাকে ফাঁসি দেয়
তোমাকে যদি হারাই, আমি বাঁচবো না।

চিঠি আমাদের আনন্দে ভাষায় – স্নেহের ছোট ভাই সোহাগ-আশা করি ভালো আছো, আমরাও অনুরূপ আছি। পর সমাচার এই যে, গতকাল রাতে আকাশ আলো করে চাঁদের মতো আমাদের ‘ভাতিজী’ পৃথিবীতে এসেছে’। আবার কোন চিঠি আমাদের বুকে বিষাক্ত ধনুকের তীব্র শরাঘাতের মত বিদ্ধ হয়, যেমন- ‘প্রিয় হাফিজ এ চিঠি যখন তোমার হাতে পৌঁছবে তখন আমাদের প্রিয় বাবা আর আমাদের মাঝে নেই।

প্রিয়জনের প্রস্থানে ব্যস্ত ব্যাকুল মন ফিরে ফিরে জিজ্ঞেস করেই যায়-
এখন তুমি কোথায় আছ কেমন আছ পত্র দিও
এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালি তালপাখাটা
খুব নিশীথে তোমার হাতে কেমন আছে পত্র দিও
ক্যালেন্ডারের কোন পাতাটা আমার মত খুব ব্যথিত
ডাগর চোখে তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে পত্র দিও।

ফাজিলাতুন নেছাকে না পাওয়ার বেদনায় বেদনাভরা হৃদয়ের বহিঃপ্রকাশে প্রিয় বন্ধু কাজী মোতাহের হোসেনকে কবি কাজী নজরম্নল ইসলাম যে চিঠি লিখেছেন তার অংশবিশেষ এমন-
‘প্রিয় মতিহার,
পরশু বিকেলে এসেছি কলকাতা। ওপরের ঠিকানায় আছি। এর আগেই আমার আসবার কথা ছিল- অসুখ বেড়ে ওঠায় আসতে পারিনি। দু’চার দিন এখানেই আছি। মন কেবলি পালাই পালাই করছে। কোথায় যাই ঠিক করতে পারছিনে। হঠাৎ কোনদিন কোন এক জায়গায় চলে যাব’। ‘যে দিন আমি ঐ দূর তারার দেশে চলে যাবো- সে দিন তাকে বোলো এ চিঠি দেখিয়ে- সে যেন দু’টি ফোঁটা অশ্রু তর্পণ দেয়, শুধু আমার নামে! হয়তো আমার নামে! হয়তো আমি সে দিন খুশিতে উল্কা ফুল হয়ে তার নোটন খোঁপায় ঝড়ে পড়ব। তাকে বলো বন্ধু, তার কাছে আমার আর চাওয়ার আর কিছু নেই। আমি পেয়েছি -তাকে পেয়েছি আমার বুকের রক্তে, চোখের জলে। আমি তার উদ্দেশে, আমার শান্ত-স্নিগ্ধ অন্তরের পরিপূর্ণ চিত্তের একটি সশ্রদ্ধ নমস্কার রেখে গেলাম। আমি যেন শুনতে পাই, সে আমায় সর্বান্তকরনে ক্ষমা করেছে। ফুলের কাঁটা ভুলে গিয়ে তার ঊর্ধ্বে ফুলের কথাই যেন মনে রাখে।

‘ভালো আছি ভালো থেকো আকাশের ঠিকানায় চিঠি লেখ’ গানের কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র জন্য স্ত্রী তসলিমা নাসরীন চিঠি লিখেছেন-
প্রিয় রুদ্র, তুমি আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখতে বলেছিলে। তুমি কি এখন আকাশ জুড়ে থাকো? তুমি কি আকাশে উড়ে বেড়াও তুলোর মতো? আমারও খুব পাখি হতে ইচ্ছে করে। আমারও সারা আকাশ উড়ে উড়ে মেঘের সাথে খেলতে ইচ্ছে করে। ছোটবেলায় ছাদে উঠে আকাশ দেখতাম খুব। রাতের তারা গুনতাম। এখনো ফাঁক পেলেই আকাশ দেখি। তুমি এই জগৎ সংসার ছেড়ে আকাশে চলে গেছো।
এখন চিঠি প্রায় হারিয়ে গেছে। এখন রাত জেগে আবেগ-অনুভূতি দিয়ে প্রিয়তমার জন্য একটি চিঠি লেখার সময় নেই। এখন মোবাইল, ইন্টারনেট, ফেইসবুক, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটস্অ্যাপ, উইচ্যাট প্রিয়জনকে চোখে চোখে রাখে সারাক্ষণ। চিঠি লিখে সময় নষ্ট করার সময় কোথায়? যন্ত্রের ষড়যন্ত্র চিঠিকে নির্বাসনের দ- দিয়েছে। আসলেই কী তাই?
তাহল কবি মহাদেব সাহা কেন বলেন- করুণা করে হলেও চিঠি দিও, খামে ভরে আঙুলে তুলে দিও মিহিন সেলাই। ভুল বানানেও লিখো প্রিয়, বেশি হলে কেটে ফেলো তো, এটুকু সামান্য দাবি চিঠি দিও তোমার শাড়ির মতো অক্ষরের পাড়-বোনা একখানি চিঠি।

প্রিয়জনের চিঠি আমরা প্রতিদিন পড়তে মন চায়। তাই একদিনও সেই চিঠি না পেলে মনে হয় ডাকপিয়নের জর হয়েছে’। এ রকম ছিলো বিশ্বাসের ভিত। কিন্তু সে বিশ্বাস আজ হারাতে বসেছে সবক্ষেত্রে। তাই আমরা একটি সুন্দর পৃথিবী সাজাতে আবারও চিঠি লিখবো- আবারও দেখবো।
রানার ছুটেছে তাই ঝুমঝুম ঘন্টা বাজছে রাতে
রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে,
রানার চলেছে, রানার!
রাত্রির পথে পথে চলে কোনো নিষেধ জানে না মানার।
দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছোটে রানার-
কাজ নিয়েছে সে নতুন খবর আনার।

 

লেখক: মাহবুবুর রহমান তুহিন

- Advertisement -spot_img

আরো পড়ুন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ খবর