কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের এক আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নেন অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ জয়নব বেগম (১৯)। শনিবার রাত দেড়টার দিকে তার প্রসববেদনা শুরু হয়। তখন কোনো পরিবহন না থাকায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ওমর হায়দার।
রবিবার (১৪ মে) ভোরে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। সেই নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে “মোখা”। প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নবজাতকের জন্মের পর জয়নব বেগম তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “ওসি স্যারকে ধন্যবাদ। স্যার না থাকলে আমার কী অবস্থা হতো, জানি না।”
আশ্রয়কেন্দ্রের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার রাত ৯টার দিকে জয়নব বেগম আশ্রয়কেন্দ্রে যান। রাত দেড়টায় তার প্রসববেদনা শুরু হয়। এ সময় কোনো গাড়ি পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারেন পেকুয়া থানার ওসি। এরপর তিনি নিজের গাড়িতে করে ১০ কিলোমিটার দূরে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জয়নব বেগমকে নিয়ে যান।
মা ও ছেলে সুস্থ আছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, “ওই নারী স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম দিয়েছেন।”
জয়নবের স্বামী মোহাম্মদ আরকান এ বিষয়ে বলেন, “ঘূর্ণিঝড় মোখার নামানুসারে আমার ছেলের ডাকনাম ‘মোখা’ রাখা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ছেলের জন্মের খবর পেয়ে পাঁচ হাজার টাকা অর্থসহায়তা দিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য জাফর আলম ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সিকদার। ওসি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা সবাইকে মিষ্টি খাইয়েছেন। ছেলের জন্য কাপড়চোপড় নিয়ে এসেছেন।”
ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার প্রথম আলোকে জানান, রাতে আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে ছিলেন। তখন তিনি খবর পান, এয়ার আলী খান আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে এক নারী প্রসববেদনায় কাতরাচ্ছেন। রাত দেড়টায় সেখানে গাড়ি পাওয়া যাবে না। তাই তিনি গাড়ি নিয়ে সেখানে পৌঁছে ওই নারীকে হাসপাতালে নিয়ে যান।