এখন থেকে বিদেশি রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনাররা আর পুলিশের বাড়তি এসকর্ট (নিরাপত্তা) সুবিধা পাবেন না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, তবে কেউ চাইলে ভাড়া করতে পারবেন। সরকারের এ সিদ্ধান্তের ফলে যু্ক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, সৌদি আরবসহ ছয় দেশের রাষ্ট্রদূতদের জন্য বাড়তি পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া বন্ধ হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, সরকারি সিদ্ধান্তের পরই রাষ্ট্রদূতদের এসকর্ট সুবিধা স্থগিত করা হয়েছে। এখন থেকে রাষ্ট্রদূতদের গাড়ির সামনে-পেছনে পুলিশের গাড়ি থাকবে না। তবে নিরাপত্তার অংশ হিসেবে তাদের আবেদনের পর যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে গত রবিবার ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এখন থেকে আর কেউ এসকর্ট সুবিধা পাবেন না। সবাইকে এক লেভেলে আনা হয়েছে। তবে তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।
এখন যেভাবে নিরাপত্তা নেবেন রাষ্ট্রদূতরা
আগে বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রদূতদের নিরাপত্তায় তাদের গাড়ির সামনে পেছনে পুলিশের গাড়ি থাকত। এখন তা থাকবে না। তবে তারা পুলিশি নিরাপত্তা পাবেন। এজন্য আগে থেকে আবেদন করবেন সংশ্লিষ্ট থানায় বা পুলিশের ঊধ্বর্তনদের কাছে। এ সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন মেনে তারা নিরাপত্তা নিতে পারবেন। এতদিন এসব নিয়ন-কানুন ছিল না।
ডিএমপির একটি সূত্র জানিয়েছে, আনসার বাহিনী থেকে একটি প্রটোকল ইউনিট করা হয়েছে যারা মন্ত্রী, সচিব, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের প্রটোকলে থাকবেন। তারাই এখন প্রটোকলের দায়িত্ব পালন করবেন। তবে প্রটোকলে আনসার সদস্যরা থাকলেও রাজধানীর গুলশান-বারিধারা কূটনৈতিক জোনে ডিএমপির ডিপ্লোমেটিক সিকিউরিটি বিভাগের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবেন।
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন সোমবার গণমাধ্যমকে বলেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমাদের নানা কৃচ্ছ্রসাধন করতে হচ্ছে। তাই রাষ্ট্রদূতদের যে বাড়তি নিরাপত্তা সুবিধা দেওয়া হয়, সেটি আর অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, কোনো দেশের রাষ্ট্রদূতকেই আমরা পুলিশের এসকর্ট সুবিধা দেব না। কারণ ওইসব দেশে আমাদের রাষ্ট্রদূতকে এই ধরনের সুবিধা দেওয়া হয় না। আমরা মন্ত্রীরা গেলেও কোনো কিছু দেয় না। আমাদের রাষ্ট্রদূতরাও কোনো এক্সট্রা প্রটেকশন পায় না। আমাদের কোথাও কোনো এক্সট্রা ব্যাটালিয়ান দেয়া হয় না। কোথাও না।
মোমেন বলেন, ‘আমাদের দেশে এতো অশান্তি নাই যে আপনাকে রাস্তায় গুলি করে মেরে ফেলবে। আমাদের দেশে আমরা কয়েকজনকে দেই। এখন সবাই চায়। তাই বলেছি আমরা এটা উইথড্র করলাম।’
আমাদের দেশের আইনশৃঙ্খলা অনেক ভালো আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ফলে এসকর্ট সুবিধা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এরপরও যদি কোনো রাষ্ট্রদূত মনে করেন, তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বেশি দরকার, তাহলে তারা নিরাপত্তা সুবিধা ভাড়া করে নিতে পারবেন।