সাজ্জাদুল বারী
বর্ষার জল নেমেছে সবে করছে জমিতে চাষ
রবি শস্যে ভরবে গোলা মনেতে এই আশ ।
রাতের শেষে চরের পানে ছুটেছে কিষাণ দল
ফসল বোনার জন্য তারা ছেড়েছে খাওয়া জল ।
শত ব্যস্ততা আর হরেক কাজেও আনন্দ না ধরে
বুনছে স্বপ্ন শস্যে হয়ে যেদিন মাঠ উঠবে ভরে ।
বর্ষার পলি জমিকে এবার উর্বর করেছে বেশ
বাড়তি সার লাগবে না তাই আনন্দের নাই শেষ ।
চরের অদূরে বড় মাঠটাতে রাখাল চরায় গরু
বেদনার সুর বাজায় বাঁশিতে মন যেন তার মরু ।
গরুর পিঠেতে শালিক পাখি কি যেন খুঁটিয়া খায়
খাবার ফাঁকে গরুগুলো আবার রাখালের পানে চায়।
দলছুট হয়ে আলগা এক ছাগল ম্যা ম্যা করে ডাকছে
নদীর ওপাড়ে সাদেক বেপারী আপন পুত্রকে হাঁকছে।
ওদিকে গাঁয়ের মসজিদ হতে আযানের ধ্বনি আসে,
শরতের শাদা মেঘেরা যেন বাতাসের সাথে ভাসে।
ক্ষেতের আলে বাবুল বেপারী নামাজের জন্য বসে
উদম গায়েই নামাজ পড়ে মাথায় গামছা কষে ।
ক্ষেতের ওধারে কাউনের পান্তা খায় টুকুর চাচা
জবেদ বেপারী হুক্কা টানে মাসুম মারে কাছা ৷
আসরের পড়ে ঘরে ফেরে যখন শূন্য খাঁখাঁ মাঠ
নাইতে আসে কিষাণ বধূরা ওপাড়ে নদীর ঘাট ।
নদীর ওপাড়ে ঘনঝোপ তথায় হরেক পাখির বাস
জায়গা নিয়ে ঝগড়া করে সকাল-দুপুর-মাস ।
শালিক জোড়া ঘর বেঁধেছে ঝোপের ছোটো গাছে,
বড় গাছটিতে বাবুই পাখিরা বাতাসের সাথে নাচে ।
ঝোপের বড় ডুমুরের গাছটিতে থাকতো নাকি পরী
চৈত্র মাসের চাঁদিমায় যাকে দেখেছিলো এক বুড়ি ।
বহুদিন পরেও সেই গল্প আজও বুঝি বেঁচে আছে
গাঁয়ের ছোটোরা ভুল করেও যায় না ঝোপের কাছে ।
এক ডালে তার চিলের বাসা বেনে বউ অন্য ডালে
সাম্যের পতাকা করছে বহন এখনো এই কালে ।