বিতর্ক আর গায়ক নোবেল যেন সমার্থক। গায়ক হলেও ব্যক্তিজীবনের বিতর্কিত কাজকর্ম আর কিংবদন্তি শিল্পীদের আক্রমণের কারণে বারবারই খবরের শিরোনামে এসেছেন তিনি। সম্প্রতি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজের এক অনুষ্ঠানের মঞ্চে উঠে ‘মাতলামি’র কারণে ফের খবরের শিরোনামে নোবেল।
সেদিন কতটা মাতাল ছিলেন বিতর্কিত এই গায়ক, তা নিয়ে মুখ খুললেন অবশেষে। এক সাক্ষাৎকারে নোবেল জানিয়েছেন, সেদিন মঞ্চে ওঠার আগে সামান্য মদ্যপান করেছিলেন তিনি। সেইসঙ্গে ওই ঘটনার জন্য সবার কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন।
সাক্ষাৎকারে নোবেল দাবি করেন, ‘আয়োজকদের পক্ষ থেকে মদ সরবরাহ করা হয়েছিল। স্টেজে ওঠার আগে হালকা একটু রিলাক্সেশনের জন্য, হালকা একটু ফিলিংসের ভেতরে যাওয়ার জন্য একটু মদ পান করার দরকার পড়ে। অতিরিক্ত মদ পান করার ধারে কাছে যাইনি। স্টেজে ওঠার আগে সামান্য মদ পান করেছিলাম।’
ক্ষমাপ্রার্থনা করে গায়ক বলেন, ‘এ ঘটনায় আমি অত্যন্ত অনুতপ্ত এবং দুঃখিত। হাঁটু গেড়ে হাতজোড় করে সবার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। এ রকম ঘটনা আর ঘটবে না।’
এদিকে, মদ সরবরাহের কথা অস্বীকার করে আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ও ফুলবাড়ি জছিমিয়া মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবেদ আলী বলেন, ‘আয়োজকদের পক্ষ থেকে নোবেলকে মদ সরবরাহের কোনো প্রশ্নই আসে না। এটা সম্ভবই না। কোথায় এবং কীভাবে নোবেল মদ পেয়েছেন এবং পান করেছেন তা আমাদের জানা নেই। তবে সেদিন তিনি মদ পান করেই স্টেজে ওঠেছেন সেটা সত্য। এজন্য আমারা অত্যন্ত লজ্জিত এবং দুঃখিত।’
সেদিন যা ঘটেছিল
২৭ এপ্রিল ফুলবাড়ি ডিগ্রি কলেজের ৫০তম বর্ষপূর্তি উদযাপন উপলক্ষ্যে গান পরিবেশনের জন্য গায়ক নোবেলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। রাত ৯টার দিকে তার গান গাওয়ার কথা থাকলেও তিনি মঞ্চে ওঠেন ১১টা ২০ মিনিটে।
মঞ্চে উঠে নোবেল তার চশমা খুলে পাঞ্জাবির কলারে রেখে বলেন, দ্বিতীয় বার কুড়িগ্রাম আসলাম। এর আগে এসেছিলাম তোমাদের সাথে দেখা হয়নি। সুদূর ইন্ডিয়ার বর্ডার লাইনে থেকে গেছিলাম। তোমাদের কারও সাথে দেখা হয়নি। এবার দেখা হলো আলহামদুলিল্লাহ।
এরপর ‘এই আমার চশমাটা কই’ বলে চিৎকার করেন নোবেল। পরে চশমা পেয়ে চোখে পরে ‘সে যে আমার জন্মভূমি’ গান পরিবেশন করেন। এসময় তিনি মাইক্রোফোন স্ট্যান্ড আছড়িয়ে ভেঙে ফেলেন। এরপর স্টেজে দুই পা তুলে প্যারেড করার মতো লাথি মেরে পরনের প্যান্ট দুই হাত দিয়ে ঠিক করে আবারও গান ধরেন ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’।
গানের এক পর্যায় মাতলামি করতে করতে বসে পড়েন নোবেল। তার এমন মাতলামির কারণে ক্ষেপে গিয়ে দর্শকরা জুতা, পানির বোতল ও ঢিল ছুঁড়ে মারেন নোবেলের দিকে। পরে স্টেজে থাকা কয়েকজন এবং আয়োজকরা তাকে সরিয়ে নিয়ে যান।